বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা চত্বর সজ্জিত সাঁওতাল
সংস্কৃতির নানা উপকরণে। তীর-ধনুক ও আদিবাসী জীবনের নানা অনুষঙ্গ দিয়ে
সাজানো হয়েছে জাতীয় নাট্যশালা। আরণ্যকের আয়োজনে তিন দিনব্যাপী রাঢ়াঙ উৎসব
উপলক্ষ্যে শিল্পকলার নাট্যশালাকে ওইভাবে সাজানো হয়েছে। মঞ্চনাটক ‘রাঢ়াঙ’র
১৫০তম প্রদর্শনী উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শিল্পকলা
একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় ওই উৎসব শুরু হয়। উৎসবের উদ্বোধন করেন বরেণ্য
সাংবাদিক কামাল লোহানী। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নাট্যজন আতাউর রহমান,
আরণ্যকের প্রধান সম্পাদক মান্নান হীরা, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির
মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী প্রমুখ।
কামাল লোহানী বলেন, ‘রাঢ়াঙ’ শব্দটি শুনে আমার তেভাগা আন্দোলনের কথা মনে পড়ছে। তখন রাজশাহীর সাঁওতাল পল্লীতে ঢোল ও মাদল বাজিয়ে লড়াইয়ের জন্য সাঁওতালরা জড়ো হতো। রংপুরে তিরিশ হাজার আদিবাসী মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। আদিবাসীদের আদিবাসী বলে আলাদা করে দেখা যাবে না, তাদের পূর্ণ সাংবিধানিক অধিকার দিতে হবে। আতাউর রহমান বলেন, ‘রাঢ়াঙ’ নাটকটি আমাদের ইতিহাসের অংশ। আমরা আদিবাসী বলে কোনো শ্রেণিকে আলাদা করতে চাই না। আমরা চাই, সব মানুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা হোক।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতেই ছিল অতিথি বরণ। তবে এই অতিথি বরণ প্রচলিত পদ্ধতিতে নয়। রাজশাহী থেকে আগত কৃষিজীবী সাঁওতালরা অতিথিদের বরণ করেন সাঁওতালদের নিজস্ব অতিথি বরণের পদ্ধতিতে। সাঁওতাল ভাষার গানে নেচে নেচে অতিথি বরণ পর্বটি ছিল আন্তরিকতায়পূর্ণ। উদ্বোধনীর পর গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালার মূল হলে মঞ্চস্থ হয় ‘বঙ্গভঙ্গ’। মামুনুর রশীদ রচিত এ নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন ফয়েজ জহির। আজ সন্ধ্যা ৬টায় জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলের লবিতে রাঢ়াঙ নাটকের ১৫০তম প্রদর্শনীর উদ্বোধন হবে। উদ্বোধন করবেন নাট্যজন
ফেরদৌসী মজুমদার। ২০০৪ সালে প্রথম মঞ্চে এসেছিল রাঢ়াঙ। ২০১১ সালে ৩১ জুলাই নাটকটির শততম মঞ্চায়ন হয়েছিল। ২০০০ সালে নওগাঁয় আলফ্রেড সরেনের নেতৃত্বে ভূমির জন্য যে লড়াই হয়েছিল, তাতে সাঁওতালদের আত্মত্যাগের ইতিহাস এ নাটকের উপজীব্য। মামুনুর রশীদ রচিত ও নির্দেশিত এ নাটকে অভিনয় করেছেন তমালিকা কর্মকার, শামীমা শওকত লাভলী, মিতালী দাস, জয়রাজ, ঊর্মি হোসেন, সাজ্জাদ সাজু, চঞ্চল চৌধুরী, আ খ ম হাসান প্রমুখ।
আগামীকাল সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ হবে রানা প্লাজার দুর্ঘটনা নিয়ে রচিত নাটক ‘স্বপ্নপথিক’। হারুন রশীদ রচিত এ নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন মামুনুর রশীদ। এ ছাড়াও সকাল ১০টায় জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে রয়েছে ‘বহুত্ববাদী সমাজে আদিবাসী সংস্কৃতির বিকাশ’ শীর্ষক সেমিনার। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রদান করা হবে আরণ্যক দীপু স্মৃতি পদক।
তাজউদ্দীন আহমদকে নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনী শুরু : পুরো আলোকচিত্র প্রদর্শনীটি বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদকে নিয়ে। গ্যালারি টুয়েন্টি ওয়ানের দেয়ালে দেয়ালে সাজানো আছে তাঁর রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক জীবনের নানান সময়ের ছবি। গতকাল বিকেলে ধানমন্ডির গ্যালারি টুয়েন্টি ওয়ানে এই বিশেষ প্রদর্শনীটির উদ্বোধন করেন শিক্ষাবিদ ড. আনিসুজ্জামান। এই আয়োজনে আরো উপস্থিত ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে সিমিন হোসেন রিমি এমপি, কর্নেল আবু ওসমান ও গ্যালারি টুয়েন্টি ওয়ানের পরিচালক শামীম সুব্রানা।
উদ্বোধন শেষে ড. আনিসুজ্জামার বলেন, তাজউদ্দীন আহমদ মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত করেছেন। নানা রকম উৎপীড়নের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁকে আমার জানার সুযোগ হয়েছে ১৯৫১ সাল থেকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে, মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং পরবর্তী সময়ে তাঁর অবদানের কথা এ দেশ জাতি মনে রাখবে। এই মানুষটি কখনো নিজের স্বার্থের কথা ভাবেননি। নীতি এবং আদর্শকে সঙ্গী করে পরিচালিত হয়েছেন। কিন্তু আমাদের ইতিহানের করুণ অধ্যায় যে যাঁদের নেতৃত্বে এ দেশ স্বাধীন হয়েছিল ঘাতকদের হাতে তাঁরা নিহত হয়েছিলেন।
প্রদর্শনীর ২২০টি ছবিতে তাজউদ্দীন আহমদের জীবনের নানা সময় বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ের ছবি যেমন তাজউদ্দীন আহমদের মুক্তাঞ্চল পরিদর্শন, আহত মুক্তিযুদ্ধাদের হাসপাতালে দেখতে যাওয়া, মুক্তাঞ্চলে ভাষণ দেয়া, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে নানা সময়ের ছবিগুলো স্থান পেয়েছে। প্রদর্শনীতে যাদের তোলা ছবি স্থান পেয়েছে তারা হলেন- রশিদ তালুকদার, গোলাম মাওলা, মোহাম্মদ আলম, মঞ্জুরুল আলম বেগ, কামরুল হুদা, মনোয়ার হোসেন, জহিরুল হক, আফতাব আহম্মেদ, আব্দুল হামিদ রায়হান ও পাভেল রহমান। এই প্রদর্শনী চলবে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। খোলা থাকবে প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।
কামাল লোহানী বলেন, ‘রাঢ়াঙ’ শব্দটি শুনে আমার তেভাগা আন্দোলনের কথা মনে পড়ছে। তখন রাজশাহীর সাঁওতাল পল্লীতে ঢোল ও মাদল বাজিয়ে লড়াইয়ের জন্য সাঁওতালরা জড়ো হতো। রংপুরে তিরিশ হাজার আদিবাসী মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। আদিবাসীদের আদিবাসী বলে আলাদা করে দেখা যাবে না, তাদের পূর্ণ সাংবিধানিক অধিকার দিতে হবে। আতাউর রহমান বলেন, ‘রাঢ়াঙ’ নাটকটি আমাদের ইতিহাসের অংশ। আমরা আদিবাসী বলে কোনো শ্রেণিকে আলাদা করতে চাই না। আমরা চাই, সব মানুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা হোক।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতেই ছিল অতিথি বরণ। তবে এই অতিথি বরণ প্রচলিত পদ্ধতিতে নয়। রাজশাহী থেকে আগত কৃষিজীবী সাঁওতালরা অতিথিদের বরণ করেন সাঁওতালদের নিজস্ব অতিথি বরণের পদ্ধতিতে। সাঁওতাল ভাষার গানে নেচে নেচে অতিথি বরণ পর্বটি ছিল আন্তরিকতায়পূর্ণ। উদ্বোধনীর পর গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালার মূল হলে মঞ্চস্থ হয় ‘বঙ্গভঙ্গ’। মামুনুর রশীদ রচিত এ নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন ফয়েজ জহির। আজ সন্ধ্যা ৬টায় জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলের লবিতে রাঢ়াঙ নাটকের ১৫০তম প্রদর্শনীর উদ্বোধন হবে। উদ্বোধন করবেন নাট্যজন
ফেরদৌসী মজুমদার। ২০০৪ সালে প্রথম মঞ্চে এসেছিল রাঢ়াঙ। ২০১১ সালে ৩১ জুলাই নাটকটির শততম মঞ্চায়ন হয়েছিল। ২০০০ সালে নওগাঁয় আলফ্রেড সরেনের নেতৃত্বে ভূমির জন্য যে লড়াই হয়েছিল, তাতে সাঁওতালদের আত্মত্যাগের ইতিহাস এ নাটকের উপজীব্য। মামুনুর রশীদ রচিত ও নির্দেশিত এ নাটকে অভিনয় করেছেন তমালিকা কর্মকার, শামীমা শওকত লাভলী, মিতালী দাস, জয়রাজ, ঊর্মি হোসেন, সাজ্জাদ সাজু, চঞ্চল চৌধুরী, আ খ ম হাসান প্রমুখ।
আগামীকাল সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ হবে রানা প্লাজার দুর্ঘটনা নিয়ে রচিত নাটক ‘স্বপ্নপথিক’। হারুন রশীদ রচিত এ নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন মামুনুর রশীদ। এ ছাড়াও সকাল ১০টায় জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে রয়েছে ‘বহুত্ববাদী সমাজে আদিবাসী সংস্কৃতির বিকাশ’ শীর্ষক সেমিনার। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রদান করা হবে আরণ্যক দীপু স্মৃতি পদক।
তাজউদ্দীন আহমদকে নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনী শুরু : পুরো আলোকচিত্র প্রদর্শনীটি বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদকে নিয়ে। গ্যালারি টুয়েন্টি ওয়ানের দেয়ালে দেয়ালে সাজানো আছে তাঁর রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক জীবনের নানান সময়ের ছবি। গতকাল বিকেলে ধানমন্ডির গ্যালারি টুয়েন্টি ওয়ানে এই বিশেষ প্রদর্শনীটির উদ্বোধন করেন শিক্ষাবিদ ড. আনিসুজ্জামান। এই আয়োজনে আরো উপস্থিত ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে সিমিন হোসেন রিমি এমপি, কর্নেল আবু ওসমান ও গ্যালারি টুয়েন্টি ওয়ানের পরিচালক শামীম সুব্রানা।
উদ্বোধন শেষে ড. আনিসুজ্জামার বলেন, তাজউদ্দীন আহমদ মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত করেছেন। নানা রকম উৎপীড়নের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁকে আমার জানার সুযোগ হয়েছে ১৯৫১ সাল থেকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে, মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং পরবর্তী সময়ে তাঁর অবদানের কথা এ দেশ জাতি মনে রাখবে। এই মানুষটি কখনো নিজের স্বার্থের কথা ভাবেননি। নীতি এবং আদর্শকে সঙ্গী করে পরিচালিত হয়েছেন। কিন্তু আমাদের ইতিহানের করুণ অধ্যায় যে যাঁদের নেতৃত্বে এ দেশ স্বাধীন হয়েছিল ঘাতকদের হাতে তাঁরা নিহত হয়েছিলেন।
প্রদর্শনীর ২২০টি ছবিতে তাজউদ্দীন আহমদের জীবনের নানা সময় বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ের ছবি যেমন তাজউদ্দীন আহমদের মুক্তাঞ্চল পরিদর্শন, আহত মুক্তিযুদ্ধাদের হাসপাতালে দেখতে যাওয়া, মুক্তাঞ্চলে ভাষণ দেয়া, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে নানা সময়ের ছবিগুলো স্থান পেয়েছে। প্রদর্শনীতে যাদের তোলা ছবি স্থান পেয়েছে তারা হলেন- রশিদ তালুকদার, গোলাম মাওলা, মোহাম্মদ আলম, মঞ্জুরুল আলম বেগ, কামরুল হুদা, মনোয়ার হোসেন, জহিরুল হক, আফতাব আহম্মেদ, আব্দুল হামিদ রায়হান ও পাভেল রহমান। এই প্রদর্শনী চলবে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। খোলা থাকবে প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।
0 Comment "সাঁওতাল বিদ্রোহের ইতিহাস নিয়ে চলছে আরণ্যকের তিন দিনব্যাপী রাঢ়াঙ উৎসব"
Post a Comment