গুলি করে আদিবাসী কিশোর হত্যা

নওঁগা পত্নীতলায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রকাশ্যে গুলি করে এক বালককে
হত্যা এবং আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। সোমবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার আকবারপুর
গ্রামের বুধুয়া পুকুর পাড়ে ভূমিহীনদের বসতবাড়িতে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামে সরকারি খাসজমি
বুধুয়া পুকুর পাড়ে ভূমিহীন আদিবাসী উরাও ও মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন বাড়ি
নির্মাণ করে বসবাস করে আসছিলেন। একই সম্পত্তির জবর দখল রেকর্ড মূলে দাবি
করে ওই গ্রামের প্রভাবশালী আবদুল মতিন গং পুকুর পাড়ে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ
করার জন্য ইতিপূর্বে বেশ কয়েক দফায় ওই বস্তিতে হামলা চালায়। সোমবার সকাল
৯টার দিকে ৫০-৬০ জনের ভাড়াটিয়া লাঠিয়াল বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে পুনরায়
ভূমিহীনদের বসতবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় ও ভাংচুর শুরু করে। ভূমিহীনরা তাদের
আশ্রয়স্থল বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করলে প্রভাবশালী আবদুল মতিন বাড়ির ভেতর
থেকে তার লাইসেন্স করা দু’নলা বন্দুক এনে প্রকাশ্যে বস্তির ওপর ৪ রাউন্ড
গুলি চালায়। এ সময় ওই বন্দুকের গুলি লেগে সুনু উরাওয়ের ছেলে শ্রী মিথূন
উরাওয়ের (১৪) মৃত্যু হয়। এছাড়া মাহতাব আলীর ছেলে হাফিজুল হক (২৫), জয়নালের
ছেলে বেলাল (২৮), শ্রী সুভান উরাওয়ের ছেলে শ্রী উকিল উরাও (২৭), মৃত
নজিমুদ্দীনের ছেলে নূর ইসলাম (৩৫), শহিদুল ইসলামের স্ত্রী সায়েদা খাতুন
(৩০) গুরুতর আহত হন। আহতদের পতœীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা
 হলে হাফিজুল ও বেলালের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাৎক্ষণিক তাদের রাজশাহী
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। খবর  পেয়ে পত্নীতলা ফায়ার সার্ভিস সেখানে উপস্থিত হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।  প্রভাবশালী আবদুল মতিনের বাড়িটি ঘেরাও করে গ্রামবাসী। পরে বাড়িটি পুলিশ
হেফাজতে নিয়ে তল্লাশি চালিয়ে খুনি আবদুল মতিন, তার ভাই আবদুল মজিদ, মোজাম ও
 ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েকজন লাঠিয়াল বাহিনীসহ ১৪ আসামিকে আটক করে। আবদুল
মতিনের বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। নওগাঁ পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক
পিপিএম, পত্নীতলা সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার ইয়াসিন আলী ও অফিসার ইনচার্জ
(ওসি) আবদুর রফিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায়
হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছিল।

0 Comment "গুলি করে আদিবাসী কিশোর হত্যা"

Post a Comment