আদিবাসী রিনা টুডু এখন স্বাবলম্বী

পার্বতীপুরের
 আদিবাসী পল্লীর হতদরিদ্র রিনা টুডু একজন সফল নারী। নিজের পরিশ্রম ও
ধৈর্যের মাধ্যমে সংসারে সচ্ছলতা বয়ে এনেছেন। পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি এখন
স্বাবলম্বী। পার্বতীপুরের ২ নাম্বার মন্মথপুর ইউনিয়নের খোড়াখাই আদিবাসী পল্লীতে রিনা
টুডুর বসবাস। ১৮ বছর বয়সে দিনাজপুর সদর উপজেলার নসিপুর গ্রামে তার বিয়ে হয়।
 বিয়ের পর জানতে পারেন স্বামীর নিজস্ব ভিটাবাড়ি, জায়গা-জমি নেই। অন্যের
বাড়িতে স্বামী বসবাস করেন। মানুষের বাড়িতে শ্রম বিক্রি করে চলে তার সংসার।
বর্তমানে দুই সন্তানসহ চার সদস্যের সংসার তাদের। পরিবারের খরচ চালাতে তাকে
হিমশিম খেতে হয়। নেশায় আসক্ত স্বামী-সন্তান নিয়ে তিনি দিশাহারা। অভাব সহ্য
করতে না পেরে রিনা টুডু স্বামী-সন্তান নিয়ে মনের কষ্টে বাবার বাড়ি চলে
আসেন। শুরু হয় তার নতুন করে বেঁচে থাকার যুদ্ধ। ২০০৮ সালে এনডিএফের
সহযোগিতায় রিনা টুডুর খোড়াখাই আদিবাসী পাড়ায় এটিএসও সংগঠন তৈরি করা হয়।
সেখানে সদস্য হয়ে প্রতি সপ্তাহে সঞ্চয় জমা করেন লোকজন। দলীয় বিভিন্ন
ইস্যুভিত্তিক আলোচনাগুলো যথাক্রমে ক্ষুদ্র ব্যবসা, হাঁস-মুরগি পালন, শূকর
পালন, শাকসবজি চাষ রিনা টুডুর ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে সাহায্য করে। বাড়িতে
স্বামীর অনুমতি নিয়ে বসতভিটার পাশে একটি মুদির দোকান দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
সংস্থা থেকে ৫০০০ টাকা ঋণ গ্রহণ করে ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন। নিজের শ্রম ও
প্রচেষ্টায় তিল তিল করে বৃদ্ধি পায় তার মূলধন। বর্তমানে তার দোকানে ৩০-৩৫
হাজার টাকার মাল রয়েছে। তার দোকানে প্রতিদিন ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা বেচাকেনা
হয়। রিনা টুডুর স্বপ্ন দুই মেয়েকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করবেন এবং নিজস্ব
ভিটাবাড়িতে বসবাস করবেন। ধৈর্য, প্রচেষ্টা, পরিশ্রম ও সাহসিকতা তার জীবনের
মোড় অনেকটা বদলে দিয়েছে, দিয়েছে সংসারে সচ্ছলতা। রিনা টুডুর উন্নয়নের এ
প্রচেষ্টা অন্যদেরও উদ্বুদ্ধ করতে পারে।

0 Comment "আদিবাসী রিনা টুডু এখন স্বাবলম্বী"

Post a Comment