ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার স্বপ্ন আদিবাসী যুবক রমেশের

আদিবাসী যুবক রমেশ ঋষি। পিতৃহীন এ যুবক টিউশানি ও অন্যের জমিতে দিন মজুরীর কাজ করে নিজের সংসার চালানোর পাশাপাশি নিজের পড়া লেখাও চালিয়ে আসছেন।

দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে ইংরেজি বিষয় নিয়ে অর্নাস পড়েছেন। মাস্টার্স এখনো বাকি। অনার্সে ভালো ফলাফল করেছেন তিনি। এখন বিসিএস পাশ করে ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার ইচ্ছে তার।

তবে শেষ পর্যন্ত অর্থাভাবে সেই স্বপ্ন মাঝপথে থমকে যাবে কি না সেই দুঃচিন্তা ভর করেছে রমেশ ঋষির উপর। তার পরিবারেরও একই দুঃচিন্তা।

আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ সমাজে অবহেলিত-বঞ্চিত। অশিক্ষা, চরম দারিদ্রতা আর ক্ষুধা এদের নিত্যসঙ্গী। চিরবঞ্চিত এই রীতি-নীতি বদলাতে যুবক রমেশ ঋষি ভাগ্যের সাথে যুদ্ধ করে দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্স পর্যন্ত পড়েছেন। অর্থনৈতিকভাবে বিধ্বস্ত রমেশকে তার বোন প্রবী ঋষি মানসিকভাবে সাহায্য করেন। কিন্তু ভাইয়ের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া নিয়ে তিনিও শঙ্কিত।

স্থানীয় কয়েক জন ছাত্র জানান, রমেশ প্রাইভেট টিউটর হিসেবে খুবই মেধাবী। তার  কাছে পড়ে কোনো ছাত্র ফেল করে না।

একবছর আগে রমেশের বাবা মহন্ত ঋষি মারা যান। তারপর থেকে সংসারে হাল ধরেন রমেশ। একদিকে সংসার চালানো, আবার একই সাথে লেখাপড়াও চালিয়ে যাওয়া আদিবাসী এ যুবকের জন্য অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।

এলাকাবাসী জানায়, জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ যুদ্ধ করে এগুতে হচ্ছে রমেশকে। তার জীবনে একটাই লক্ষ্য, আর তা হলো বড় হওয়া। কোনোদিন প্রাইভেট পড়ার সুযোগ পায়নি রমেশ। শহরের মেসে থেকে পড়ার মত অর্থনৈতিক ক্ষমতা নেই তার। এজন্য প্রতিদিন সাইকেলে ২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে দিনাজপুর সরকারি কলেজে যাতায়াত করতে হয় তাকে। রমেশের লেখাপড়া বন্ধ হলে তা হবে দুঃখজনক ঘটনা।

রমেশের লেখাপড়া অব্যাহত রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, বিরল উপজেলার ধামইর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার শ্রী চিত্রমোহন রায়।

তার মা সুকমনিও ছেলের লেখাপড়া যেন বন্ধ না হয় তার জন্য সরকার ও দেশবাসীকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য আকুল আবেদন করেছেন।

0 Comment "ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার স্বপ্ন আদিবাসী যুবক রমেশের"

Post a Comment